ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচন নিয়ে আর নয় ঝামেলা!

প্রতিটি বিজনেস এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে নিজের প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস এর মাধ্যমে বিজনেসকে আরও লাভজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। বর্তমান সময় ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগ। বিজনেসকে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং (কিছু কিছু বিজনেস ছাড়া) এর কোন বিকল্প নেই। ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়া বিজনেস নিয়ে বড় কিছু আশা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাদের দেশে বিজনেস এ ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন রকমের ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসের প্রয়োজন পড়ছে আজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনের দিকে অগ্রসরের জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের আশেপাশে এত বেশি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি গড়ে উঠছে যে কারণে ভালো মানের ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচন করতে গিয়ে আমাদের রীতিমত ঘাম ছুটে যাচ্ছে। আশা করছি আমার এই লিখাটি আপনার বিজনেস এর জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি  নির্বাচনের কাজ অনেকখানি সহজ করে দিবে। চলুন এক নজরে দেখে নেই কোন বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচনের পূর্বে অবশ্যই বিজনেসের গোল সম্পর্কে আপনার সার্বিক ধারণা থাকতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আপনি স্পেসিফিক ভাবে কি অর্জন করতে চাচ্ছেন সেই বিষয়ে যদি অবহিত না থাকেন তাহলে আপনার পক্ষে এজেন্সি নির্বাচন করা দুঃসহ কাজ হয়ে যাবে। আপনি যদি অবহিত না থাকেন তাহলে এজেন্সিকে কিভাবে দায়িত্ব অর্পণ করবেন?

এমন এজেন্সি খুজে বের করুন যার কিনা আপনার ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে পূর্বে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। যেমন ধরুন আপনি এডুকেশন ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কাজ করছেন। এমন এজেন্সি নির্বাচন করুন যাদের কিনা পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে এডুকেশন সেক্টর এ কাজ করার। যেহেতু তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে তারা সহজেই আপানর বিজনেস এর পেইন পয়েন্টগুলো ধরতে পারবে এবং সমাধানও বের করে ফেলতে পারবে যা কিনা বিজনেসকে সফলতার দিকে নিয়ে যাবে।

এই প্রবাদটি আমরা সবাই জানি “ সস্তার তিন অবস্থা”। ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা যদি কোয়ালিটি থেকে সস্তা জিনিসকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি তাহলে বিজনেসের বারোটা বাজতে বেশি সময় লাগবে না। ধরুন আপানর কাছে তিনটি এজেন্সির প্রপোজাল জমা পড়লো। হাই লেভেল ক্রিয়েটিভ এর একটি কাজের জন্য এজেন্সি ক চার্জ করল ৪০ হাজার টাকা, এজেন্সি খ ৪৫ হাজার টাকা এবং এজেন্সি গ চার্জ করল ১৫ হাজার। আপানর অবচেতন মন কিন্তু এজেন্সি গ এর দিকে যেতে চাইবে কেননা তারা কম চার্জ করেছে। কিন্তু আপনি যাচাই করে দেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবেন না যে আসলেই তারা কিভাবে পারবে একই কাজ এত কমে করে দিতে। তাদের সাথে কাজ শুরু করার পর বুঝবেন কি ভুলটাই না আপনি করেছেন যখন কাজের কোয়ালিটি আপনার মন মত হবে না অথবা সময়মত ডেলিভেরি দিতে পারবে না ।

বিভিন্ন এজেন্সির পোর্টফলিও এনালাইসিস করতে টাইম ইনভেস্ট করুন। একটি এজেন্সি কত লম্বা সময় ধরে তার ক্লায়েন্টকে সার্ভিস দিচ্ছে এই বিষয়টা জানা খুব জরুরি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে। একটি ভালো এজেন্সির সার্থকতা সেখানেই যখন ওই এজেন্সির ক্লায়েন্ট ধরে রাখার রেট বেশি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পৌঁছানোর আগে এই বিষয় গুলো একটু ভাল্ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির সাথে মিটিঙে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে যান। তাদের ওয়েবসাইট, পোর্টফলিও আর যা কিছু আছে সবকিছু এনালাইসিস করে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন তৈরি করে নিয়ে যান। তাদের কাজের ধরন  সম্পর্কে জানতে চান। কি রকম সময় নিয়ে তারা কাজ ডেলিভেরি করে থাকে তা বুঝে নিন যাতে ভবিষ্যতে কোন সমস্যায় না পড়তে হয়।

কিছু কিছু ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি আছে যারা অবাস্তব প্রমিস করে থাকে তাদের ক্লায়েন্ট এর কাছে কাজটি পাবার জন্য। যেমন ধরুন এজেন্সি ক কোন রকম মার্কেট এনালাইসিস ছাড়াই তার ক্লায়েন্টকে প্রমিস করল তার সেল ১০০ গুণ বাড়িয়ে দিবে এজেন্সির সার্ভিস এর মাধ্যমে। যখনি কোন এজেন্সি অবাস্তব প্রমিস করবে বুঝে নিতে হবে কোন সমসা আছে সেখানে। এসব এজেন্সি কে তালিকা থেকে বাদ দেয়াটাই শ্রেয়।

সোশ্যাল প্রুফ চেক করে নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রে। মার্কেটে তাদের গ্রহনযোগ্যতা কেমন যাচাই করতে ভুলে গেলে চলবে না কিন্তু। আপনার নির্বাচিত এজেন্সির সার্ভিস নিয়ে বর্তমান ক্লায়েন্ট এর মনোভাব কেমন সেটিও দেখে নিতে হবে। সবকিছু বিবেচনায় এনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য ডেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা কি না আপানকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে খুবই উপকার করে। যেসব ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি আপানকে রিয়েল টাইম ডাটাতে এক্সেস দিতে গড়িমসি করে তাদের সাথে কোন রকম চুক্তিতে না যাওয়াই ভালো।

একটি ভালো এজেন্সি কখনই লম্বা সময়ের জন্য চুক্তি করার জন্য আপানকে প্রেসার দিবে না। চুক্তি কতদিনের হবে তার সময়সীমা ক্লায়েন্ট এর উপর ছেড়ে দেয় পরীক্ষিত এজেন্সিগুলো। এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রে।

উপরের উল্লেখিত বিষয়গুলো  লক্ষ্য রেখে ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি নির্বাচন করার পর তাড়াহুড়ো করা যাবে না ফল পাবার জন্য। আপানর বিজনেসকে ভালো পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এজেন্সিকে পর্যাপ্ত সময় এবং পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *