Blog

I like to write about people, the places they live and the things with which they choose to surround themselves. Here are some of my favorite pieces that made it into Article.

ডিজিটাল মার্কেটারের কাজটা আসলে কি?

বেশ কয়েক বছর আগে যখন ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করা শুরু করলাম তখন মানুষকে বুঝাতে রীতিমত ঘাম ঝড়িয়ে যেত একজন ডিজিটাল মার্কেটার আসলে করেটা কি। আগের থেকে বর্তমানে অবস্থা অনেক উন্নতি হয়েছে তবুও এখনও অনেকে মনে করে ফেসবুকে বুস্টিং চালানোর মধ্যেই একজন ডিজিটাল মার্কেটারের কাজের পরিধি সীমাবদ্ধ। অধিকাংশ মানুষের ধারণার বাইরে যে ডিজিটাল মার্কেটারের কাজের পরিধি কতটা বিশাল। আসুন এক নজরে একটু চোখ বুলিয়ে নেই একজন ডিজিটাল মার্কেটার কি ধরণের কাজ করে।

  • অনলাইন ক্যাম্পেইন শুরুর আগে বিভিন্ন রকমের পরিকল্পনা করা (যেমন, অডিয়েন্স এনালাইসিস, ক্যাম্পেইন অবজেকটিভ ইত্যাদি) ডিজিটাল মার্কেটারের অন্যতম প্রধান কাজ।

 

  • অনলাইনে ক্যাম্পেইন শুরু হওয়ার পর ক্যাম্পেইন এর বিভিন্ন রকমের প্যারামিটার মনিটর করাও ডিজিটাল মার্কেটারের কাজ। প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল না আসলে অপটিমাইজেশন করা ডিজিটাল মার্কেটারের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম।

 

  • ডেটা এবং ডিজিটাল মার্কেটিং যেন একে অপরের পরিপূরক। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করবেন আর ডেটাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাবেন তা কখনও সম্ভব না। যে কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় একজন ডিজিটাল মার্কেটারের ডেটা এনালাইসিস করতে হয়।

 

  • বিভিন্ন রকমের প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করা এখন যেন ডিজিটাল মার্কেটারের জন্য ফরয হয়ে গিয়েছে। কেননা বিজনেসগুলো এখন কেবল মাত্র একটি অথবা দুটি প্ল্যাটফর্ম এর উপর নির্ভরশীল থাকতে পারছে না তাদের কাঙ্খিত অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর জন্য। যেহেতু বিজনেসগুলো এখন বিভিন্ন রকম প্লাটফরমের উপর নির্ভর সেজন্য ডিজিটাল মার্কেটারের এসব প্লাটফর্মের উপর দক্ষ হতে হয় একই সময়।

 

  • ডিজিটাল মার্কেটারের জন্য কমিউনিকেশন অত্যন্ত জরুরি বিষয়। একটি ক্যাম্পেইন সফল্ভাবে চালানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের কমিউনিকেশন অব্যাহত রাখতে হয় ডিজিটাল মার্কেটারকে। কমিউনিকেশন হতে পারে ক্রিয়েটিভ টিমের সাথে কিংবা ক্লায়েন্ট এর সাথে অথবা সেলস টিম এর সাথে। কমিউনিকেশন এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটার তার ক্যারিয়ারকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন।

 

  • ডিজিটাল মার্কেটারের শুধু টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ চালিয়ে গেলে হয় না। ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে তাকে ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে হয়। কেননা সাফল্য পেতে হলে আপানকে দুইটি বিষয় নিয়ে একসাথে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

 

  • ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে যারা কাজ করছে তাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হয় এই পরিবর্তনগুলোর সাথে যত দ্রুত পারা যায় খাপ খাইয়ে নেয়া। এইজন্য ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে সবসময় আপডেট থাকার জন্য পড়াশুনা করাটাও ডিজিটাল মার্কেটারের অন্যতম কাজ।

 

  • অনলাইন ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য নতুন আইডিয়া তৈরি করাও ডিজিটাল মার্কেটারের কাজ এর মধ্যে পড়ে।

 

  • ক্রিয়েটিভ টিম এর সাথে কাজ করা ডিজিটাল মার্কেটারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন প্লাটফর্মের জন্য কি রকম ক্রিয়েটিভ ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে সে বিষয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়াটাও ডিজিটাল মার্কেটারের কাজ।

 

  • বিভিন্ন রকমের রিপোর্ট তৈরি করাটাও ডিজিটাল মার্কেটারের অন্যতম একটি কাজ।

 

  • বর্তমান সময় সোশ্যাল মিডিয়ার বলা চলে। একই সময় বিভিন্ন রকমের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে হয় ডিজিটাল মার্কেটারের। বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট টুলগুলো নিয়ে কাজ করতে হয় ডিজিটাল মার্কেটারকে।

 

  • প্রোডাক্ট ডিজাইনে একটি বড় ভুমিকা পালন করে থাকে ডিজিটাল মার্কেটার। এছাড়া সময় বিবেচনা করে কি রকমের অফার টার্গেট কাস্টমার এর কাছে উপস্থাপন করা যায় সেগুলি নিয়েও ডিজিটাল মার্কেটার কাজ করে থাকে।

উপরে আলোচিত বিষয়গুলো ছাড়াও বিভিন্ন প্লাটফর্মের টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে যেতে হয়ে একজন ডিজিটাল মার্কেটারের। ডিজিটাল মার্কেটিং সহজ কোন বিষয় নয় যে আসলাম আর সব শিখে ফেললাম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজের পরিধি ব্যাপক। যারা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে বহুদিন ধরে কাজ করছে তাদেরও প্রতিনিয়ত শিখার মধ্যে থাকতে হচ্ছে।

অতি দরকারি এবং কার্যকরী কিছু মার্কেটিং টিপস!

বেশিরভাগ সময় আমরা ছোট ছোট জিনিস এড়িয়ে চলি মনের ভুলেই অথবা ইচ্ছে করেই। হয়তোবা এই ছোট ছোট জিনিসগুলো এড়িয়ে না গেলে সাফল্যটা আরেকটূ সহজেই ধরা দিত। মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও এরকম ছোট ছোট অনেক বিষয় আছে যা অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে যদি সঠিকভাবে এপ্লাই করা যায়। এইখানে এরকম কিছু ছোট ছোট বিষয় তুলে ধরলাম।

  • যেখানেই যান না কেন বিজনেস অথবা ভিজিটিং কার্ডটা নিতে একদমি ভুলবেন না। বিজনেস কার্ড আপনার বিজনেস এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। এর মাধ্যমে অনেকটা সহজে আপনার বিজনেস এর মার্কেটিংটা করে ফেলতে পারছেন।

 

  • নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন। কখন কার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হবেন আপনি নিজেও জানেন না। নেটওয়ার্কিং এর গুরুত্ব আমরা এখনও সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারি না। অনেকেরেই ধারণা এত নেটওয়ার্ক করে কি হবে? আমি একাই একশো।

 

 

  • আপনার প্রতিযোগীকে নিয়ে এনালাইসিস করুন। এনালাইসিস করার মাধ্যমে নতুন অনেক কিছুই আপনি যোগ করতে পারবেন আপনার বিজনেস এর জন্য অথবা মার্কেটিং প্ল্যানে। তাই বলে আবার ভেবে নিবেন না যে আমি হুবহু কপি করতে বলছি।

 

  • সবসময় নিজের মন যা চাইল সেভাবে করে মার্কেটিং করার প্রয়োজন নেই। আপনার টার্গেট কাস্টমার কি চাচ্ছে তাদের জায়গায় নিজেকে চিন্তা করে আপনার বিজনেস এর মার্কেটিং প্লান সাজান।

 

  • গ্রাহক কোন চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার কথা শুনে তা খুজে বের করুন, ধরুন গ্রাহক যদি আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনে,সোশ্যাল মিডিয়াতে,একটি ব্লগের মাধ্যমে শুনে থাকে তবে সেই দিক গুলোর মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবার মেসেজ আপনার গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেন।

 

 

  • পারসোনাল ব্র্যান্ডিং আপনি কখনই এড়িয়ে যেতে পারবেন না। নিজের ব্র্যান্ডিং নিজেকেই করতে হয়। অন্য কেও এসে আপনার হয়ে গলা ফাটাবে না। নিজের যতটুকু স্কিল আছে সেগুলো প্রচার করুন, দেখবেন কোন না কোনভাবে কাজে দিবে। সাথে নতুন নতুন স্কিল অর্জন করতে থাকুন আর নিজের জন্য বেশি বেশি সময় ব্যয় করুন। দেখবেন উপার্জনের বিভিন্ন পথ আপনার সামনে খুলে যাবে ইনশাল্লাহ।

 

  • আপনার প্রতিযোগী থেকে একটু ভিন্নভাবে নিজেকে ক্রেতার কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করুন সবসময়। ক্রেতা আপনার কাছে আসতে বাধ্য যদি নিজেকে একটু অন্যভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারুন।

 

  • ধারাবাহিকতা রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় অনলাইন কিংবা অফলাইন উভয় ক্ষেত্রে।

 

  • সবসময় আপনার বিজনেস পেইজে সেল পোস্ট করতে হবে এমনটা নয়। মাঝে মাঝে অন্যকিছু পোস্ট করতে পারেন যার মাধ্যমে কাস্টমার এনগেজমেন্ট খুব সহজে বাড়াতে পারেন । আপনার প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস এর বিভিন্ন ধরণের উপকারিতা নিয়ে পোস্ট করতে পারেন। আপনার প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস ব্যাবহার করে কিভাবে আপনার টারগেটেড কাস্টমার এর সমস্যা দূর হতে পারে সেগুলো তুলে ধরতে পারেন আপনার পোস্ট এর মাধ্যমে। দেশি বিদেশি বিখ্যাত মারকেটাররা বলে থাকেন ৮০-২০ রুলস ফলো করার জন্য বিজনেস পেজে পোস্ট করার ব্যাপারে, যদি ২০% সেল পোস্ট করি তাহলে বাকি ৮০% পোস্ট হবে সোশ্যাল পোস্ট। পুরাতন ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন এবং বিজেনস পেজে পোস্ট এর ব্যাপারে আরেকটূ চিন্তা করে দেখুন।

 

  • আপনার ব্যবসার কাস্টমার নিয়ে রিসার্চ করুন, কাস্টমার এর পিছনে সময় ইনভেস্টমেন্ট করুন। এর চেয়ে মহামূল্যবান ইনভেস্টমেন্ট আর হতে পারে না। আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি করার পর ও কাস্টমার এর সাথে যোগাযোগ বজায় রাখুন, আপনার প্রোডাক্টটি ব্যবহার করতে গিয়ে তিনি কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে কিনা জানতে চেষ্টা করুন। বর্তমান সময় প্রতিযোগিতা অনেক বেশি, এই প্রতিযোগিতাপূর্ণ মার্কেটে নিজের অবস্থান শক্ত করার জন্য কাস্টমার এর সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই।

 

  • নিজে যতবেশি জানবেন ততবেশি অন্যদের প্রভাবিত সহজে করতে পারবেন। আর মার্কেটিং এর অন্যতম প্রধান শর্তই হচ্ছে অন্যকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করা আপনার পণ্য অথবা সার্ভিস নেয়ার জন্য।

 

  • কাস্টমার ডেটাবেজ তৈরি করতে একদমি ভুলে গেলে চলবে না। আপানর কাস্টমার ডেটাবেজ যত বেশি সমৃদ্ধ হবে তত বেশি সাফল্যর প্থটাও প্রশস্ত হবে।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস উপরে উল্লেক্ষিত বিষয়গুলো যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারি তাহলে আমাদের বিজনেস অথবা যেকোন ক্ষেত্রে সাফল্য সহজে ধরা দিবে। ধন্যবাদ সবাইকে।